মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭

হাসিনার অধীনে,বিএনপি নির্বাচনে যাবে না: গয়েশ্বর


ঢাকা,রবিবার ২৮ মার্চ ২০১৭: সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ বিএনপিকেই ক্ষমতায় বসাবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কখনই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক আওয়ামী লীগ সেটা চায় না। আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গোপন পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গোপন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ তাদের আজ্ঞাবহ অযোগ্য, বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করেছে। সুতরাং আওয়ামী লীগের অধীনে তথা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয় ।এদিকে আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশ্ন রেখে বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে ৫ বছর আগে অংশ নিলাম না কেন ? কারন শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানেই আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার ৫ জানুয়ারির ভূয়া নির্বাচনকে মেনে নেয়া। আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গোপন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করেছে।তিনি বলেন, বিএনপি কখনই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। কোনো আপস নয়, প্রয়োজনে হলে কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, সংগ্রাম করবে। তিনি বলেন,পরবর্তী নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিলের যে আশঙ্কা রয়েছে, সেটি বিএনপি আমলে নিচ্ছে না।বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের কথা বলে জুযুর ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই।নির্বাচনকালীন কেবল নিরপেক্ষ সরকার হলেই কেবল বিএনপি অংশ নেবে। তিনি বলেন,আওয়ামী লীগের রাজনীতি জনগণের মন থেকে বিলিন হয়ে গেছে। তাই তারা আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পথ তৈরি করছে।আওয়ামী লীগ সরকার আজ মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে,সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করে রেখেছে,গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে রেখেছে।সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। মানুষের বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা আজ সুদূর পরাহত। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখলে অলিত গলিতে, চিপায় চাপায় গিয়ে মানুষ প্রতিশোধ নেবে। আর এসবের জন্য দায়ী হবে সরকার ও রাষ্ট্র। সুতরাং গণতন্ত্রের বিকল্প হলো গণতান্ত্রীক পথকে সম্প্রসারিত করে মানুষের মৌলিক অধিকারসমুকে উন্মুক্ত করে দেয়া। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজ দেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নেই। আছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির চেতনা। এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে প্রতারণা করছে। তারা আবারো অগণতান্ত্রিকভাবে কুক্ষিগত করে দীর্ঘ দিন ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘরে বসে গণতন্ত্রের কথা বলে আর টেলিভিশনে চেহারা দেখিয়ে আন্দোলন হয়না, আন্দোলন করতে হলে রাজপথে নামতে হবে। স্বৈরাচারের মোকাবিলার জবাব রাজপথেই দিতে হবে। তাই আসুন আমরা সবাই গণতন্ত্রের জন্য আরো একবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে লড়াই করি।ভূয়া মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যে খালেদা জিয়ার সাজা দেয়া এতই সহজ।বললেই জিয়ার সাজা হয়ে যাবে ? আজকে যাদের ফাঁসি হওয়ার কথা তারা রাষ্ট্র চালাচ্ছে। সেলুকাস ! আমাদের নেত্রী,দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিবে। এতই সহজ মগের মূল্লুখ । আমরা কি মরে গেছি, বিএনপি কি মরে গেছে ?দেশের কোটি কোটি জনগন কি মরে গেছে ? নিশ্চই নয়। এ ব্যাপারে কোনো ফর্মূলা দিয়ে কোন প্রকার কাজ হবেনা। এখন পুরো দেশটাই কারাগারে পরিনত হয়েছে।সুতরাং নতুন কারাগারের আর প্রয়োজন কি?। আমরা আমাদের শত-সহস্র সহকর্মীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করে নির্বাচনে যেতে পারিনা। তিনি বলেন, রাজপথেই নামতে হবে। সেইপথে গণতন্ত্রকামী জনগণের লাইন দীর্ঘ হবে। আর দীর্ঘ লাইনের ধাক্কায় সরকার পড়ে যাবে।  আসন্ন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক উল্লেখিত আলোচনাসভার আয়োজন করে বীর উত্তশ শহীদ জিয় শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন